শিশুর উচ্চতা যেভাবে দ্রুত বাড়বে
শিশুর উচ্চতা যেভাবে দ্রুত বাড়বে
সব বাবা-মার চিন্তা তার সন্তানকে নিয়েই থাকে। আর সন্তানের সুস্থতা ও সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা নিয়ে হলে তো কথায় নেই। প্রতিদিনের আহারে শিশু সঠিক পুষ্টি পাচ্ছে কিনা, এ নিয়েও তাদের থাকে কত প্রশ্ন। কারণ পুষ্টির ওপরই শিশুর সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা নির্ভর করে।তাহলে বুঝছেন কতটা সচেতন হওয়া দরকার বাবা-মাকে।
একজন বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি শিশু যদি তার সমবয়সীদের তুলনায় কম উচ্চতাসম্পন্ন হয়, তবেই অভিভাবকরা এ নিয়ে চিন্তিত হতে পারেন এটা স্বাভাবিক। জেনে রাখুন একেক বয়সে উচ্চতা বৃদ্ধির হার একেক রকম। দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশু বছরে ২০ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এরপর এ হার কমে আসে এবং ৫-৬ বছর বয়স পর্যন্ত এই হার বার্ষিক ১০-১২ সেন্টিমিটার হয়।
৬-৭ বছরে আরও কমে বছরে ৫-৬ সেন্টিমিটার হারে বাড়ে। আবার বয়ঃসন্ধিকালে হঠাৎ করেই লম্বা হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি বেড়ে যায়। শিশুরা বছরে ১০-১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। ১৪-১৫ বছরের পর থেকে বৃদ্ধির হার আবারও কমতে থাকে, গড়ে ১ সেন্টিমিটার হারে বেড়ে চলে ১৯ থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত। এরপর একসময় বৃদ্ধি থেমে যায়।
অনেক সময় লম্বা হওয়ার জন্য অনেক বাবা-মা শিশুকে ব্যায়াম করান। তবে শুধু ব্যায়াম করলেই হবে না ব্যায়ামের সাথে আপনার খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে। অনেক খাবার আছে যা আপনার শিশুকে লম্বা হতে সাহায্য করবে। আসুন সেই সকল খাবারের নামগুলো জেনে নিই…
ডিম
ডিম ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। আর সুস্থ শরীর, শক্ত হাড় ও লম্বা হতে সেদ্ধ ডিম অবশ্যই শিশুর খাবার টেবিলে রাখা দরকারি। কারন ডিম শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই জন্য শিশু ডিম না খাইতে চাইলেও তাকে জোর করে ডিম খায়ানো প্রয়োজন।
দুধ
শিশুর বেড়ে ওঠা ও হাড় শক্ত করতে ক্যালসিয়াম খুবই উপকারি খাদ্য উপাদান। দুধ উচ্চতা বর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং এতে উপস্থিত ভিটামিন এ ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং শিশুকে নিয়মিত দুধ খেতে দিতে ভুলবেন না। তাহলে আপনার আদরের শিশুটি তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠবে এবং সাথে সাথে লেখাপড়ায়ও অনেক হুশিয়ার হবে।
কলা
কলা শিশুর বাড়াতে অনেক উপকারি খাদ্য। সুস্থ থাকতে মজবুত হাড় গড়তে নিয়মিত কলা খাওয়ান শিশুকে। উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করা ছাড়াও কলা হজমে সাহায্য করে ও পেট পরিষ্কার রাখবে আপনার শিশুকে।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক মাছ প্রোটিন ও ভিটামিনে ভরপুর। স্যালমন ও টুনার মত মাছে আছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন ডি ও প্রোটিন। যেটা আপনার শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। সুতরাং চেষ্টা করবেন প্রতিবার শিশুর খাবারের সময় যেন সামুদ্রিক মাছ থাকে।
দই
যে কোন দুগ্ধ জাতীয় খাবারে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে। এছাড়া দই-এ ভিটামিন এ, বি, ডি ও ই আছে যা শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। সুতরাং অবশ্যই শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে দই জাতীয় খাবার বেশি খাওয়াতে হবে। তাহলেই শিশু খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠবে।
গাজর
গাজরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও এ আছে। ভিটামিন এ আপনার সন্তানের হাড়ের ক্যালসিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখে। এতে হাড় শক্ত ও সুস্থ থাকে। তার রান্না হোক বা কাচা গাজর খাওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
পালং শাক
এই সবুজ শাকটিতে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও পুষ্টি আছে। এটা আপনার শিশুর উচ্চতা বাড়াতে দারুণ সাহায্য করবে। তাই যে কোনভাবেই আপনার শিশুকে বেশি বেশি পালং শাক খাওয়াতে চেষ্টা করবেন। তাহলে শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে আপনার চিন্তা করতে হবে না।
সয়া
সয়া হাড়ে ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম প্রবেশে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া সয়াযুক্ত খাবার যেমন : সয়াবীন ও সয়াযুক্ত দুধ শিশুকে দিতে পারেন। এতে শিশুর হাড় মজবুত করতে সাহায্য করবে।
মুরগির মাংস
মুরগির মাংসে প্রোটিনের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। এটি খেলে শরীরের টিস্যু ও পেশীর গঠন খুব ভাল ভাবে হয়। তাই আপনার শিশুকে চেষ্টা করবেন যাতে তাকে নিয়মিত মুরগির মাংস খেতে দিতে।
খাদ্যের সাথে সাথে কিছু বিষয়ের দিকে নজর রাখা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেই খাবার দাবার ছাড়াও কোন বিষয় গুলো শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
১। পানি
ক্যাফেইন, কার্বোনেট জাতীয় খাবার থেকে শিশুকে দূরে রাখতে চেষ্টা করবেন। প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস পানি পান করতে দিবেন। পানি পান শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে শরীরের বিপাক ক্ষমতা বাড়ায় এবং হাড়ের বৃদ্ধিতে কাজ করে।
২। ঘুমানো
এটা প্রমাণিত যে ঘুমন্ত অবস্থায় শরীরের বৃদ্ধি হয় এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম টিস্যুকে সতেজ করে। তাই বাড়ন্ত শরীরে ঘুম খুব জরুরি। অন্তত আট থেকে ১১ ঘণ্টা গভীর ঘুম শরীরের উচ্চতা বাড়াতে প্রয়োজনী।
৩। সহজ ব্যায়াম
শিশুকে সারাদিন পড়ার টেবিলে বসিয়ে না রেখে ব্যায়াম এবং খেলাধুলা করতে উৎসাহিত করবেন। ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেটবল, ভলিবল, টেনিস, সাঁতার শেখাতে পারেন। এ ছাড়া কিছু স্ট্রেচিং (stretching) ব্যায়াম করাতে পারেন। যেমন: হ্যাঙ্গিং বারস, স্কিপিং রোপস- এগুলো শরীরকে সক্রিয় করতে কাজ করবে।
৪। ইয়োগা বা যোগব্যায়াম
সঠিক শ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপ দূর করে এই ব্যায়াম শরীরের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এ ধরনের শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম শিশুকে শেখাবেন। এ ছাড়া কিছু ইয়োগা রয়েছে যা শরীরকে সঠিকভাবে বাড়তে সাহায্য করে। তাই ফিটনেস প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে উচ্চতা বাড়বে এমন ইয়োগা প্রশিক্ষণ শিশুকে করাতে পারেন।
Very good informative writing,thanks a lot.
ReplyDeleteMany Thanks if you like it cordially please tell the students to read it.
DeleteMany Thanks Dear
Delete